কেমুসাস বইমেলা : মেলা প্রাঙ্গণে ঘুরে বেড়াচ্ছেন শিক্ষার্থীরা
স্টাফ রিপোর্ট :
প্রকাশিত হয়েছে : ০৪ ডিসেম্বর ২০২৩, ৭:২৮ অপরাহ্ণসপ্তদশ কেমুসাস বইমেলার ৪র্থ দিনে মেলাপ্রাঙ্গণে শিক্ষার্থীদের আগমন বেশি লক্ষ করা গেছে। মেলা ৩ টা থেকে শুরু হলেও বিকেল ৪টা থেকে দলে দলে তরুণ-তরুণীদের উপস্থিতি বাড়তে থাকে। তবে অধিকাংশ দর্শনার্থীরাই বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের। তারা বিভিন্ন স্টলে ঘুরে নতুন বইয়ের মলাট ওল্টাচ্ছেন, গন্ধ শুকছেন, প্রচ্ছদ দেখছেন। অনেক সময় পছন্দ হলে কিনছেন পছন্দের বইটি। মেলা থেকে সংগ্রহ করে প্রিয় লেখকদের নতুন নতুন বই। কেউবা সেলফি তুলছেন। ফটো তুলছেন প্রিয়জনদের সঙ্গে। এই ছিল সোমবার (৪ ডিসেম্বর) কেমুসাস বইমেলার চিত্র।
বইমেলায় বিশ্বনাথ থেকে থেকে রনি ও সনি দুই ভাইবোন এসেছিলেন বই কিনতে। তারা দুজনেই রহস্যময় বই পড়তে বেশি পছন্দ করেন। জাফর ইকবাল তাদের প্রিয় লেখক। অবণী, ইতি আক্তার, দুর্জয়ের পছন্দ উপন্যাস ও বাচ্চাদের নিয়ে লেখা বই। তারা সিলেট সরকারি কলেজে পড়াশোনা করছেন। বই কিনতে সব বন্ধুরা মিলে এসেছিলেন বইমেলায়। মৌমিতার ভালো লাগে কবিতার বই পড়তে। তিনি ইংরেজি সাহিত্যে পড়ালেখা করছেন।
এদিকে বইমেলা প্রাঙ্গণে বিকেল ৪টায় মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে হাতের লেখা প্রতিযোগীতা। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিশু সাহিত্যিক ও খ্যাতনামা ছড়াকার অজিত রায় ভজন। তিনি বলেন, একেকটা বই একেকটা জানালার মতো। ঘরের জানালা দিয়ে যেমন বাইরে সব কিছু দেখা যায়, তেমনি বই পড়লেও আগমীটা দেখা যায়।’ বই বিষয়ে বারট্রান্ড রাসেল বলেছেন, ‘সংসারে জ্বালা-যন্ত্রণা এড়াবার প্রধান উপায় হচ্ছে, মনের ভিতর আপন ভুবন সৃষ্টি করে নেওয়া এবং বিপদকালে তার ভিতর ডুব দেওয়া। যে যত বেশি ভুবন সৃষ্টি করতে পারে, যন্ত্রণা এড়াবার ক্ষমতা তার ততই বেশি হয়।’
বইমেলা উদযাপন পরিষদের আহবায়ক অধ্যক্ষ সাইফুল করিম চৌধুরী হায়াতের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন দেওয়ান এ এইচ এম মাহমুদ রাজা চৌধুরী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আল ইসলাহ সম্পাদক আহমেদ মাহবুব ফেরদৌস, অ্যাডভোকেট সোহেল আহমদ, কেমুসাসের পাঠাগার সম্পাদক সৈয়দ মোহাম্মদ তাহের। পুরো অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন কবি কামাল আহমদ।
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যক্ষ সাইফুল করিম চৌধুরী হায়াত বলেন, বইমেলা বাঙালির সার্বজনীন উৎসব। লেখক, প্রকাশক আর পাঠকের মিলনমেলা। এই মেলাকে কেন্দ্র করেই প্রকাশিত হয় শতকরা প্রায় ৯০ ভাগ সৃজনশীল বই। একটি জাতিগোষ্ঠীর সভ্যতা বিনির্মাণ ও জ্ঞানগত উন্নয়নে বইমেলা ব্যাপক কার্যকরী ভূমিকা রাখে।
বইমেলার মাঠে কথা হয় কেমুসাস বইমেলা উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব প্রিন্স সদরুজ্জামান চৌধুরীর সাথে। তিনি জানান, বিজয়ের মাসের প্রথম দিনে শুরু হওয়া এবারের মেলা চলবে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত। নতুন প্রজন্মকে মেলামুখী করার লক্ষে প্রথম দিন থেকেই বিভিন্ন কর্মসূচী গ্রহণ করা হয়েছে এবং প্রতিযোগীতামূলক এইসব কর্মসূচীতে শিক্ষার্থীদের ব্যাপক উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে।
তিনি বলেন, আমরা মেলায় দর্শনার্থীর কথা বিবেচনায় রেখে প্রতিদিন ব্যাপক কর্মসূচীর আয়োজন করেছি। সবকিছু মিলে একটি সমৃদ্ধ আয়োজনের মধ্য দিয়ে সকলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করাই মেলার মূল লক্ষ। বিশেষ করে দেশের স্বনামধন্য প্রকাশনা সংস্থার প্রকাশিত বইগুলো সংগ্রহ করার সুযোগ পেয়ে সকলেই পাঠমুখী হবেন।
এবারের বইমেলাটি সাহিত্য সংসদের সাবেক সভাপতি দেওয়ান ফরিদ গাজীর স্মৃতির প্রতি উৎসর্গ করা হয়েছে। দরগাগেইটস্থ সংসদ চত্বরে আয়োজিত বইমেলা প্রতিদিন বিকাল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে।