বিক্রি ও দর্শনার্থী দুটোই বেড়েছে কেমুসাস বইমেলায়
স্টাফ রিপোর্ট :
প্রকাশিত হয়েছে : ১০ ডিসেম্বর ২০২৩, ৭:২০ অপরাহ্ণশুরুর দিকে মেলা জমে না উঠলেও এখন প্রতিদিনই দর্শনার্থী বাড়ছে কেমুসাস বইমেলায়। একইসাথে বইবিক্রিও তুলনামূলক ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানালেন স্টল মালিকরা। রোববার (১০ ডিসেম্বর) বইমেলার দশম দিনে মেলা প্রাঙ্গণে প্রচুর ক্রেতা-দর্শনার্থীদের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।
সপ্তদশ কেমুসাস বইমেলায় সুনামগঞ্জ থেকে এসেছেন কলেজ শিক্ষার্থী ফারহানা আক্তার। তিনি কলেজে খবর পেয়ে ছোটো ভাই ফাহিমকে সাথে নিয়ে মেলায় এসেছেন নিজের পছন্দের কিছু বই কেনার জন্য। প্রথমা স্টলে ঢোকে দুজনেই কিনলেন ৪ টি বই।
জসীম বুক হাউসে কথা হয় প্রকাশক জসিম উদ্দিনের সাথে। তিনি জানান, গেল দুদিন থেকে বই বিক্রি বেশ ভালো হচ্ছে। জসিম প্রকাশনির বই ছাড়াও মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক বই পছন্দ তরুণ প্রজন্মের। তিনি জানান, সব ধরণের বইই রয়েছে আমার স্টলে। তিনি জানান, প্রথম দিন থেকে মেলায় দর্শনার্থী ও ক্রেতাদের উপস্থিতি কম থাকলেও এখন প্রতিদিনই আনাগোনা বাড়ছে। বিক্রি বেশ ভালো হচ্ছে। বিশেষ করে প্রতিদিন মেলাকেন্দ্রীক কর্মসূচী থাকায় সকল শ্রেণী পেশার লোকজন মেলায় আসছেন।
এদিকে বইমেলা প্রাঙ্গণে বিকেলে অনুষ্ঠিত হয় ‘ক’ ও ‘খ’ গ্রুপের মধ্যে ক্বিরাত প্রতিযোগীতা। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কেমুসাস বইমেলা উদযাপন কমিটির আহবায়ক অধ্যক্ষ ছয়ফুল করিম চৌধুরী হায়াত। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমির উপ-পরিচালক শাহ মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ মাওলানা মোক্তার আহমদ। অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেমুসাসের সাবেক সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান মাহমুদ রাজা চৌধুরী। পুরো অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন কেমুসাসের কার্যকরি সদস্য ফায়যুর রহমান।
মেলা উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব প্রিন্স সদরুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘জঙ্গিবাদকে যারা উৎসাহিত করে, যে বই পড়ে আমাদের তরুণ প্রজন্ম জঙ্গিবাদে উৎসাহিত হবে,সে সব বই কেমুসাস মেলায় রাখা হয় নি।’ তিনি বলেন, ‘আমরা অনেক রক্তের বিনিময়ে এ দেশ স্বাধীন করেছি। আমরাই একমাত্র জাতি নিজের মায়ের ভাষা প্রতিষ্ঠিত করার জন্য রক্ত দিয়েছি। পৃথিবীর আর কোনো জাতি নিজের মায়ের ভাষার জন্য রক্ত দেয়নি।’ সুতরাং বাঙ্গালীর বইমেলা মানেই মহা আনন্দ উৎসব। এই উৎসবে সকলকে সামিল হওয়ার অনুরোধ জানান তিনি।
এবারই প্রথম কেমুসাসের উদ্যোগে বইমেলা হচ্ছে ১৬ দিনব্যাপী। বিজয় দিবসের প্রথম দিনে শুরু হওয়া এই মেলা ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসের দিনেই শেষ করা হবে। নতুন প্রজন্মকে মেলামুখী করার লক্ষে প্রথম দিন থেকেই বিভিন্ন কর্মসূচী গ্রহণ করা হয়েছে এবং প্রতিযোগীতামূলক এইসব কর্মসূচীতে শিক্ষার্থীদের ব্যাপক উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে।
তিনি বলেন, আমরা মেলায় দর্শনার্থীর কথা বিবেচনায় রেখে প্রতিদিন ব্যাপক কর্মসূচীর আয়োজন করেছি। সবকিছু মিলে একটি সমৃদ্ধ আয়োজনের মধ্য দিয়ে সকলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করাই মেলার মূল লক্ষ। বিশেষ করে দেশের স্বনামধন্য প্রকাশনা সংস্থার প্রকাশিত বইগুলো সংগ্রহ করার সুযোগ পেয়ে সকলেই পাঠমুখী হবেন।
এবারের বইমেলাটি সাহিত্য সংসদের সাবেক সভাপতি দেওয়ান ফরিদ গাজীর স্মৃতির প্রতি উৎসর্গ করা হয়েছে। দরগাগেইটস্থ সংসদ চত্বরে আয়োজিত বইমেলা প্রতিদিন বিকাল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে।