মেলাকেন্দ্রীক কর্মসূচীতে দর্শনার্থীরা মুগ্ধ
স্টাফ রিপোর্ট :
প্রকাশিত হয়েছে : ১১ ডিসেম্বর ২০২৩, ১১:৩১ অপরাহ্ণ১ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া বইমেলায় প্রতিদিনই থাকছে ব্যাপক কর্মসূচী। কর্মসূচীগুলোতে অংশ নিচ্ছেন সাহিত্য, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতিনিধিবৃন্দ। স্কুল-কলেজ কেন্দ্রীক বিভিন্ন প্রতিযোগীতায়ও বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থীর উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। তবে কেমুসাস বইমেলা এবারই প্রথম ১৬ দিনব্যাপী অনুষ্ঠত হচ্ছে। মেলায় দেশের স্বনামধন্য প্রকাশনি সংস্থা ছাড়াও স্থানীয় প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান গুলোর স্টল রয়েছে। সোমবার (১১ ডিসেম্বর) বইমেলার একাদশ দিনে মেলা প্রাঙ্গণে প্রচুর ক্রেতা-দর্শনার্থীদের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।
জসীম বুক হাউসে কথা হয় প্রকাশক জসিম উদ্দিনের সাথে। তিনি জানান, গেল দুদিন থেকে বই বিক্রি বেশ ভালো হচ্ছে। জসিম প্রকাশনির বই ছাড়াও মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক বই পছন্দ তরুণ প্রজন্মের। তিনি জানান, সব ধরণের বইই রয়েছে আমার স্টলে। প্রথম দিন থেকে মেলায় দর্শনার্থী ও ক্রেতাদের উপস্থিতি কম থাকলেও এখন প্রতিদিনই আনাগোনা বাড়ছে। বিক্রি বেশ ভালো হচ্ছে। বিশেষ করে প্রতিদিন মেলাকেন্দ্রীক কর্মসূচী থাকায় সকল শ্রেণী পেশার লোকজন মেলায় আসছেন।
কেমুসাস বইমেলা উদযাপন কমিটির আহবায়ক অধ্যক্ষ ছয়ফুল করিম চৌধুরী হায়াত বলেন, বইমেলার অন্যতম বৈশিষ্ট হচ্ছে যে তা আমাদের মনে করিয়ে দেয় চিন্তার ক্ষেত্রে কত বৈচিত্র থাকতে পারে। পাঠাগারে, এমনকি বইয়ের দোকানেও সাধারণত বই সাজানো হয় বিষয় ধরে। কিন্ত বইমেলায় প্রকাশকদের স্টলে কত বিচিত্র রকমের বই পাশাপাশি জায়গা করে নেয়। লেখকদের মনের কথা, গবেষণার ফলাফল কত ভিন্নভিন্ন ভাবে প্রকাশিত হতে পারে সেটা আমাদের চোখের সামনে হাজির হয় বইমেলায়। কত সহজেই কবিতার পাশে জায়গা করে নেয় গবেষণালবদ্ধ বিষয়, কথাসাহিত্যিকের চোখে সমাজের চিত্রের গা ঘেঁষে ব্যঙ্গ রচনার উপস্থিতি কিংবা বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীর পাশে স্মৃতিকথারা সহজেই জায়গা করে নেয়। আমরা বলতে পারি যে, এ হচ্ছে আমাদের জীবনেরই ভিন্ন ভিন্ন প্রকাশ। ফলে সৃষ্টিশীলতার বিবেচনায়, তার বৈচিত্রের বিবেচনায় বই মেলা হচ্ছে একটি সমাজের ছবি।
কেমুসাস বইমেলা উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব প্রিন্স সদরুজ্জামান চৌধুরী বলেন, বইমেলার যে মৌলিক বৈশিষ্ট একে অন্য যে কোনো মেলা থেকে আলাদা করে দিয়েছে। যারা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বই মেলার খবর রাখেন – আন্তর্জাতিক বা জাতীয় — তারা এটা জানেন যে, যে সমাজে চিন্তার দ্বার রুদ্ধ করে দেয়া হয়নি, সেখানে বই মেলায় ভিন্ন মতের, পথের বই নিয়ে হাজির হন প্রকাশকরা। বইমেলা সেই অর্থে সমাজের জানালা; যে সমাজে চিন্তার স্বাধীনতা যত বিস্তৃত প্রকাশিত বইয়ের ক্ষেত্রে আমরা তত বেশি ভিন্ন মতের বই দেখতে পাই।
বইেমলা উদযাপন কমিটির সদস্য দেওয়ান মাহমুদ রাজা চৌধুরী বলেন, যে সমাজে চিন্তার পথ রুদ্ধ, নতুন ভাবনার পথ কন্টকিত সেখানে মেলার আকার বড় হতে পারে, প্রদর্শিত বইয়ের সংখ্যা বেশি হতে পারে কিন্ত তা আসলে অগ্রসরমানতার লক্ষণ নয়। মনে রাখা দরকার বই মেলা যতটা বইয়ের মেলা তার চেয়ে বেশি একটি সমাজের জানালা।
এবারের বইমেলাটি সাহিত্য সংসদের সাবেক সভাপতি দেওয়ান ফরিদ গাজীর স্মৃতির প্রতি উৎসর্গ করা হয়েছে। দরগাগেইটস্থ সংসদ চত্বরে আয়োজিত বইমেলা প্রতিদিন বিকাল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে।