মোটরের সাহায্যে পানিতে চলবে মৌলভীবাজারের রাফি’র তৈরি জাহাজ
নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ১১ আগস্ট ২০২২, ৯:৫৭ অপরাহ্ণএকটি খেলনার নৌযান তৈরী করলো মৌলভীবাজারের ছোট কিশোর হাকিমুল ইসলাম রাফি।অনেক মানুষ তার নৌযানটি দেখতে ভিড় করেন। হাকিমুল ইসলাম রাফি জানালেন, তার তৈরি জাহাজটি মটর, একটি ব্যাটারি ও পাখার সাহায্যে পানিতে চলে। সে জানায়, নৌপথে তার গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম যেতে চোখে পড়ে লঞ্চ। যেটি তার নজর কাড়ে। আর সে ইউটিবের সাহায্য নিয়ে দেখে মেধা খাটিয়ে ককশিট, মটর আর ব্যাটারি দিয়ে তৈরি করেছে একটি খেলনার লঞ্চ। যা কিনা সত্যিকারের লঞ্চের মতো পানিতে ছুটে চলে।
পনের বছর বয়সী কিশোর হাকিমুল ইসলাম রাফির বাড়ি কিশোরগঞ্জ জেলার অষ্টগ্রাম। সে প্রায় দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে পরিবারের সাথে মৌলভীবাজার পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ড গোবিন্দশ্রী এলাকার বর্তমান বাসিন্দা। হাকিমুল স্থানীয় গোবিন্দশ্রী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক শেষ করে বর্তমানে মৌলভীবাজার টাউন কামিল মাদ্রাসায় ৮ম শ্রেনীতে অধ্যয়নরত। নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান হয়েও হাকিমুল ইসলাম রাফি পড়াশোনার পাশাপাশি উদ্ভাবনী কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন, যা সত্যিই প্রশংসার দাবি রাখে বলে জানালেন তার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও পাড়া-প্রতিবেশী।
হাকিমুল ইসলাম রাফি বলেন, ছোটকাল থেকেই এসবের প্রতি প্রবল ইচ্ছাশক্তি কাজ করত। আমি ২০১৯ সালে বোতল এবং মটর ব্যবহার করে হেলিকপ্টার ও ২০২০ সালে ককশিট দিয়ে বিশাল আকারের শহিদ মিনার তৈরি করি। পরিবারের কাছ থেকে পাওয়া হাত খরচের টাকা জমিয়ে রাখতাম। সেই জমানো টাকা দিয়ে যেসব যন্ত্র ক্রয় করতে লাগে যেমন- ব্যাটারি, মটর, লাইট ইত্যাদি বাজার থেকে কিনে আনতাম। আর সেগুলো দিয়েই কাজ করতাম। তারপর আমি ২০২১ সালে বিজয় ফুল তৈরি প্রতিযোগিতায় কাগজ দিয়ে ফুল তৈরি করে জাতীয় পর্যায়ে পুরস্কার অর্জন করি। তবে সহযোগিতা পেলে আরও ভালো কিছু তৈরী করতে পারবো। এর জন্য প্রয়োজন সরকার ও প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করি। আর এই জাহাজটি নির্মাণ করতে আমার পাঁচদিন সময় লেগেছে।
গোবিন্দশ্রী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা বেগম উম্মে সালমা বলেন, হাকিমুল ইসলাম রাফি সে আমাদের প্রাক্তণ ছাত্র । সে তৃতীয় শ্রেণীতে থাকাকালীন সময়ে কাগজ দিয়ে শাপলা তৈরিতে জেলা পর্যায়ে প্রথম এবং বিভাগীয় পর্যায়ে দ্বিতীয় হয়েছে। চর্তুথ শ্রেণীতে থাকাকালীন সে একটি হেলিকপ্টার তৈরি করেছিলো। যেটি মটর দিয়ে এমনভাবে সে তৈরি করেছিলো প্লেনটি আকাশে ওড়তে পারতো। তার এই উদ্ভাবনী দেখে আমরা সকলেই আনন্দিত হয়েছিলাম। বর্তমানে সে একটি জাহাজ তৈরি করেছে। তার জাহাজের নাম স্বপ্নের পদ্মা, অতি চমৎকার তার এই উদ্ভাবনী। তার এই বুদ্ধিমত্তা সত্যিই প্রসংশনীয়। সে যদি কোন সহযোগীতা পায় তাহলে সে অনেক দূর এগিয়ে যাবে বলে মনে আমি মনে করি।
স্থানীয় সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠক সাইফুল ইসলাম সোহেল বলেন, হাকিমুলের ইসলাম আমি তাকে খুব কাছ থেকে দেখেছি তার যথেষ্ট মেধাশক্তি রয়েছে। সরকার যদি তাকে প্রয়োজনীয় সাহায্য সহযোগিতা দিয়ে গড়ে তোলে, তাহলে আমি মনে করি সে দেশের অগ্রযাত্রায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে।