সিলেটে আলু নিয়ে তেলেসমাতি:খাওয়া ছাড়ছেন অনেকে
নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ২৮ অক্টোবর ২০২০, ১২:০৯ অপরাহ্ণআলুর দাম এখন চালের চেয়েও বেশি থাকায় হতাশায় ভোগছেন সিলেটের নিম্ন আয়ের মানুষ আর সেই হতা|শা থেকে অনেকে আলু খাওয়া ছেড়ে দিতে শুরু করেছেন বলে জানিয়েছেন নগরীর বিভিন্ন নাগরিক বৃন্দ। সুতারাং এই যখন পরিস্থিতি তখন বুধবার নগরীর আম্বর খানা বড় বাজারে আসছেন মদিনা মার্কেটের এক রিকশা চালক ছমির আলী। তার সাথে আলাপ কালে তিনি বলেন, একদিকে করোনা অন্যদিকে কমন জিনিসি আলু এবার চালের চাইতে আলুর দাম বেশি গত কয়েকদিন যাবত আলু খাওয়া চেড়ে দিয়েছেন। শুধু তিনিই নন জানাগেছে নগরীর বেশির ভাগ পরিবার তরকারীতে আলু খাওয়া ছেড়ে দিয়েছেন।
অপরদিকে সরকার আলুর বাজার দর নির্ধারণ করে দিলেও তা মানছেন না সিলেটের ব্যবসায়ীরা। নিত্যপণ্য ও সবজির দাম বাজারে অস্বাভাবিক ভাবে বৃদ্ধি পেলেও দেশের ফলন আলুর দাম কেনো বৃদ্ধি পেল তার উত্তর নেই কারো কাছে । কেউ কেউ বলছেন সুযোগ বুঝে অসাধু ব্যবসায়ীরা বাজারে আলুর সংকট তৈরী করে রেখেছেন । বাজারে নেই কোন তদারকি, নেই কোন অভিযান ফলে বিক্রেতারা ইচ্ছা মতো দাম বাড়াচ্ছেন ।
নগরীর বিভিন্ন বাজারে ঘুরে দেখা যায় একই চিত্র। কোথাও সরকারি দামে বিক্রি হচ্ছে না। প্রতি কেজি আলু ৪৫-৫০ টাকা বিক্রি করছেন খুচরা বিক্রেতারা। কোনো কোনো জায়গায় ৫৫-৬০ টাকাও বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি আলু। এ অবস্থায় বিপাকে পড়েছে সিলেটের মধ্যবিত্ত, নিম্নবিত্ত ও গরিব শ্রেণির মানুষ।
জানা যায়, সরকারের কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তর কোল্ড স্টোরেজ পর্যায়ে প্রতি কেজি আলুর দাম ২৩ টাকা, পাইকারি পর্যায়ে ২৫ টাকা এবং খুচরা পর্যায়ে ৩০ টাকা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। পরবর্তীতে আর ৫ টাকা বৃদ্ধি করে ৩৫ টাকা ধরে বিক্রি করার জন্যে নির্দেশ মন্ত্রণালয়। তবে এই দামে আলু বিক্রি করে লোকসানে পড়তে হচ্ছে বলে আড়তদাররা। সরকারের নির্ধারিত মূল্যে আলু বিক্রি করে লোকসানের মুখে পড়ছেন আড়তদাররা। তাই দেশের অন্য স্থান থেকে আলু ক্রয় করা বন্ধ রেখেছেন সিলেটের কালিঘাটের পাইকারী বাজারের ব্যবসায়ীরা।
বুধবার সন্ধ্যায় সিলেট নগরীর কালিঘাট এলাকার পাইকারী বাজারে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আড়তগুলোতে আলু শূণ্য। কোথাও কোথাও আলু থাকলেও কেউ বিক্রি করতে যাচ্ছেন না। তবে পাইকারী বাজারের আলু না থাকলেও খুচরা বাজারগুলোতে আলু বিক্রি হচ্ছে বেশ চড়া দামে।
কথা হয় কয়েকজন ক্রেতাদের সাথে তারা বলেন, ৫শ টাকা রোজে কাজ করে দিন শেষে পরিবারের জন্যে চাল নিব না ডাল নিব এই ভাবনায় চিন্তায় থাকি।আগে আলুর দাম ছিল ২০-২৫ টাকা। এক কেজি নিলে দু-বেলা দুমুটো খেতে পারতাম কিন্তু এখন তো সেই আলুর দামও ৪০-৪৫ টাকা। কিভাবে কি করব।
কালিঘাটের আড়তদার মতিউর রহমান জানান, আলু নিয়ে আমরা চিন্তায় রয়েছি। ঢাকাসহ বিভিন্ন জায়গায় আলু যে দামে বিক্রি করা হচ্ছে সেই দামে আমার কিনে আনলে তার দাম দাড়াবে ৪০টাকা। সরকারি নির্ধারিত মূল্যে আলু বিক্রি সম্ভব না হওয়ায় আমরা আলু আড়তে আলু তুলছি না।
আরেক আড়ৎদার জামিল আহমদ জানান, প্রতিদিন হাজার হাজার কেজি আলু দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ক্রয় করা হলেও গত কয়েকদিন ধরে আমরা আলু ক্রয় করছি না। বেশি দামে আলু কিনে সরকারের দেওয়া নির্ধারিত মূল্যে তা বিক্রি সম্ভব হচ্ছে না। যদি বিক্রি করতে হয় তাহেল আমাদের লোকাসান ছাড়া উপায় নেই।
এব্যাপারে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর সিলেট জেলার সহকারী পরিচালক মো.আমিরুল ইসলাম মাসুদ বলেন, বাজারে আলুর সংকট বলা যায় না। কিছু ব্যবসায়ীরা অতিরিক্ত মূল্যের আশায় এমন অবস্থা শুরু হয়েছে। তিনি বলেন, অতিরিক্ত মূল্যে কেউ যাতে আলু বিক্রি না করতে পারে সে ব্যাপারে আমাদের অভিযান প্রতিদিন অব্যাহত রয়েছে । তবে বাজারের ব্যবসায়ীরা অভিযানের সময় সরকারের নির্ধারিত দামে বিক্রি করলেও অভিযানের পর আবারো দাম বৃদ্ধি করেন।