সিলেট অঞ্চলে ধান সংগ্রহহের টার্গেট ৫৮ হাজার ৮২ মেট্রিক টন
নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ২৯ এপ্রিল ২০২১, ১১:৪৮ পূর্বাহ্ণচলতি বছরে সিলেট বিভাগে ৫৮ হাজার ৮২ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহ করবে খাদ্য মন্ত্রণালয়। গেলবারের চেয়ে এবার প্রতি কেজিতে ১ টাকা বৃদ্ধি করে ২৭ টাকা দরে এই ধান সংগ্রহ করা হবে। বুধবার ভার্চ্যুয়াল মাধ্যমে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার সিলেট বিভাগে বোরো ধান সংগ্রহ কার্যক্রম ২০২১ এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।
সিলেটের আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক মঈন উদ্দিন জানান, ২৮ এপ্রিল থেকে ১৬ আগস্ট পর্যন্ত ধান সংগ্রহ কার্যক্রম চলবে। এবার প্রতি মণ ধানের দাম ১ হাজার ৮০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ্যাপসের মাধ্যমেও কৃষকরা সরকারি খাদ্য গুদামে নিজেদের কষ্টার্জিত ধান বিক্রি করতে পারবেন।
খাদ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত বছর সিলেট বিভাগ থেকে ৬৯ হাজার ৮৮৬ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। নির্ধারিত সময়ের অতিরিক্ত এক মাস বৃদ্ধি করেও টার্গেটের অর্ধেকও পূরণ করা যায়নি। গেল বছর টার্গেটের বিপরীতে সংগ্রহ করা হয় ৩০ হাজার ৩৫৯ মেট্রিক টন ইরি-বোরো ধান। গেলবারের তুলনায় এবার সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজার জেলায় সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা কমেছে ১১ হাজার ৮০৪ মেট্রিক টন। গেলবারের চেয়ে এবার সুনামগঞ্জ জেলায় ৩ হাজার ৫ মেট্রিক টন, হবিগঞ্জ জেলায় ৯ হাজার ৮৮৩ মেট্রিক টন ও মৌলভীবাজার জেলায় ২ হাজার ১০২ মেট্রিক টন ধান কম সংগ্রহ করা হবে। তবে, সিলেট জেলায় গেলবছরের চেয়ে এবার ৩ হাজার ১৮৬ মেট্রিক টন ধান বেশি সংগ্রহ করা হবে বলে সূত্র জানিয়েছে। জানা গেছে, চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে সিলেট জেলার ১৩ উপজেলা থেকে ১০ হাজার ৫১৫ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহ করা হবে। গত বছর এর পরিমাণ ছিল ৭ হাজার ৩২৯ মেট্রিক টন। এবার সিলেট সদর উপজেলা থেকে ৭৩৬ টন, দক্ষিণসুরমা থেকে ৭৫৫ টন, বিশ্বনাথ থেকে ৯৫৪ টন, বালাগঞ্জ থেকে ১ হাজার ৩১ টন, ওসমানীনগর থেকে ৮৪৫ টন, ফেঞ্চুগঞ্জ থেকে ৪৯৮ টন, গোলাপগঞ্জ থেকে ৯৩১ টন, বিয়ানীবাজার থেকে ৭৬০ টন, কানাইঘাট থেকে ৭৭৯ টন, জকিগঞ্জ থেকে ৮৪৭ টন, জৈন্তাপুর থেকে ৬১৫ টন, গোয়াইনঘাট থেকে ১ হাজার ৪৩ টন ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা থেকে ৭২১ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহ করবে খাদ্য অধিদপ্তর।
সূত্র জানায়, এবারও বেশি ধান উৎপাদনের জেলা সুনামগঞ্জ থেকে বিভাগের মধ্যে সর্বোচ্চ ২৯ হাজার ৬৫৯ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহ করা হবে। গেল বছর এর পরিমাণ ছিল ৩২ হাজার ৬৬৪ মেট্রিক টন। এবার সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা থেকে ২ হাজার ৬৩ টন, দক্ষিণ সুনামগঞ্জ থেকে ৩ হাজার ৪২ টন, দোয়ারাবাজার থেকে ১ হাজার ৬৫২ টন, ছাতক থেকে ১ হাজার ৯০৬ টন, জগন্নাথপুর থেকে ২ হাজার ৭৫৬ টন, দিরাই থেকে ৪ হাজার ২০২ টন, শাল্লা থেকে ৩ হাজার ১৪৯ টন, ধর্মপাশা থেকে ৪ হাজার ৩১ টন, জামালগঞ্জ থেকে ৩ হাজার ২৯৭ টন ও তাহিরপুর উপজেলা থেকে ২ হাজার ২২৭ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহ করবে খাদ্য অধিদপ্তর।
জানা গেছে, মৌলভীবাজার জেলায় এবার সংগ্রহ করা হবে ৬ হাজার ৭২৩ মেট্রিক টন। গত বছর এর পরিমাণ ছিল ৮ হাজার ৮২৫ মেট্রিক টন। এবার মৌলভীবাজার সদর উপজেলা থেকে ১ হাজার ২৮৩ টন, শ্রীমঙ্গল থেকে ১ হাজার ১৬৮ টন, কুলাউড়া থেকে ৯৯২ টন, বড়লেখা থেকে ৫৩৬ টন, রাজনগর থেকে ১ হাজার ৪৯১ টন, কমলগঞ্জ থেকে ৫৩৬ টন ও জুড়ী উপজেলা থেকে ৭১৭ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহ করা হবে।
জানা গেছে, হবিগঞ্জ জেলায় এবার সংগ্রহ করা হবে ১১ হাজার ১৮৫ মেট্রিক টন ধান। গেল বছর এর পরিমাণ ছিল ২১ হাজার ৬৮ মেট্রিক টন। এবার হবিগঞ্জ সদর উপজেলা থেকে ১ হাজার ৭৯ টন, লাখাই থেকে ১ হাজার ৭১ টন, মাধবপুর থেকে ৯৯০ টন, চুনারুঘাট থেকে ৮৬৯ টন, বাহুবল থেকে ৭৮৬ টন, নবীগঞ্জ থেকে ১ হাজার ৬৯১ টন, বানিয়াচং থেকে ৩ হাজার ২৬৯ টন ও আজমিরীগঞ্জ উপজেলা থেকে ১ হাজার ৪৩০ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহ করবে খাদ্য অধিদপ্তর।
জানা গেছে, এবার দেশে চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে সাড়ে ৬ লাখ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহ করা হবে। এদিকে কৃষকরা জানিয়েছেন, বিভিন্ন উপজেলার খাদ্য গুদামে ধান নিয়ে গেলে কর্মকর্তারা উৎকোচের জন্য অহেতুক হয়রানি করেন। কোথাও কোথাও নির্দিষ্ট সিন্ডিকেট পুরো খাদ্য গুদামের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়, এর ফলে প্রকৃত কৃষকরা বঞ্চিত হন। কৃষকরা এ বিষয়ে খাদ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের কঠোর নজরদারির দাবি জানিয়েছেন ।