ত্বকচর্চায় করুন স্কিন ফাস্টিং
নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ১৩ মে ২০২১, ১১:২৯ পূর্বাহ্ণস্কিন ফাস্টিং টার্মটি এখনো হয়তো অনেকের কাছেই নতুন। অনেকে আবার বলে বসতে পারেন ত্বক কি খাবার গ্রহণ করে, যে তাকে উপোস বা ফাস্টিং করতে হবে। তবে অনেকেই আছেন যাঁরা নানা কারণে দিনের পর দিন ভারী মেকআপ ব্যবহার করেন। একটা সময় তাঁদের ত্বকও মেকআপের ভার নিতে নিতে ক্লান্ত হয়ে পড়ে। তাই সুযোগ পেলেই মেকআপ থেকে মুক্তি দেওয়া উচিত। পোশাকি ভাষায় এরই নাম স্কিন ফাস্টিং ।একটু সহজভাবে বলতে গেলে উদাহরণ টানতে হবে খাবার দিয়েই। ধরুন চলছে বিয়ের মৌসুম। কিছুদিন টানা বিয়ের দাওয়াতে অধিক তেল–মসলাযুক্ত খাবারে উদোর পূর্তি করেছেন। এখন পরের কিছুদিন হালকা খাবার খাওয়া উচিত। ত্বকের বেলাতেও বিষয়টি একই।
জাপানের একটি প্রাকৃতিক প্রসাধনী তৈরি প্রতিষ্ঠান মিরাই ক্লিনিক্যাল স্কিন ফাস্টিং শব্দটি প্রথম ব্যবহার করে। এ বিষয়ে তারা একটি আর্টিকেল প্রকাশ করে। যেখানে বলা হয়, ত্বকের স্বাভাবিক জৈবিক প্রক্রিয়া যাতে সঠিকভাবে কাজ করতে পারে। সে জন্য একটি নির্দিষ্ট সময় পরপর ত্বককে মেকআপহীন রাখা উচিত। এই ধারণাটি তারা গ্রহণ করে জাপানের সনাতনী চিকিৎসা পদ্ধতি থেকে। পরে ত্বক বিশেষজ্ঞরাও ধারণাটির সঙ্গে একমত প্রকাশ করেন। এবং তাঁরা জানান, সপ্তাহে দুদিন যদি হালকা মেকআপ বা মেকআপ ছাড়া থাকা যায়, তাহলে ত্বক আরও তরুণ ও প্রাণবন্ত থাকবে। এর প্রাথমিক কারণ হিসেবে বলা হয়, প্রতিদিনের ভারী মেকআপ ত্বকের কোলাজেনকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। যে কারণে ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা বা ইলাস্টিসিটি কমে যায়। আর ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা কমে যাওয়া মানে, মুখের ত্বকে ভাঁজ দেখা যাওয়া। ত্বক দ্রুত বুড়িয়ে যায় এবং বয়সের ছাপ পড়ে। ডার্মাটোলজিস্টদের মতে, নিয়মিত ভারী মেকআপ করলে, মেকআপে থাকা রাসায়নিকের ফলে ত্বকের লোমকূপ বন্ধ হয়ে যেতে পারে। ফলে অ্যালার্জি, র্যাশ, একনের মতো নানা ধরনের ত্বকের প্রদাহ দেখা যেতে পারে। তারা একটি গবেষণায় দেখেছে, সপ্তাহে দুদিন কম বা মেকআপ ছাড়া থাকতে পারলে ত্বকে নতুন কোষ জন্মায়। তবে যাঁদের একনে রয়েছে তাঁরা ক্লিনজার ব্যবহার করতে পারবেন। এবং যাঁরা প্রখর রোদে বাইরে থাকবেন তাঁরা সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে পারবেন। ক্লিনজার এবং সানস্ক্রিন ব্যবহারের বিষয়টিতে ছাড় দেওয়ার কারণ হিসেবে তারা বলেছ, ত্বক পরিষ্কার রাখা এবং সূর্যরশ্মি থেকে ত্বককে বাঁচানো সব সময়েই জরুরি। এ ক্ষেত্রে ওয়াটারবেজড সানস্ক্রিন বেছে নেওয়া উচিত। ফেসওয়াশের বদলে ফেস সেরাম ব্যবহার করা যেতে পারে।
এ ছাড়া আরও একটি টিপস তারা দিয়েছে, তা হলো বারবার পানি দিয়ে মুখ পরিষ্কার করতে হবে। জাপানের অন্যান্য প্রসাধনী প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান অবশ্য তাদের এই গবেষণাকে গুরুত্বসহকারে গ্রহণ করেনি। তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিউটি ব্লগারদের দ্বারা স্কিন ফাস্টিংয়ের ধারণাটি ব্যাপক প্রচার পায়। ইতিমধ্যে ধারণাটি নিয়ে নানা আলোচনা শুরু হয়েছে নেট দুনিয়ায়।রূপ ও ত্বক বিশেষজ্ঞরা ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে আরও কিছু বিষয় মেনে চলার উপদেশ দিয়েছেন। যেমন সপ্তাহে অন্তত দুই দিন, গোসলের ঠিক আগে স্কিন ক্লিনার ব্রাশ দিয়ে একবার ত্বক ব্রাশ করে নিতে হবে। যার সাধারণ নাম ড্রাই ব্রাশিং। এভাবে পুরো শরীর ব্রাশ করতে পারলে আরও ভালো। এতে ত্বকে রক্তসঞ্চালন ভালো হবে এবং মৃত কোষ ঝরে যাবে।
বিএ/১৩ মে