হৃদয়ে বাজিছে মায়ের আগমনী সুর
নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১২:৪২ অপরাহ্ণউৎসবপ্রেমী বাঙালির সবচেয়ে বড় পার্বণ এই দুর্গা পুজো। চার ছেলেমেয়েকে নিয়ে উমা কৈলাশ থেকে মর্তে বাপের বাড়ি এসে দিন পাঁচেক থেকে ফিরে যান শ্বশুর বাড়ি। এভাবেই ঘরের মেয়েকে আদরে যত্নে ভরিয়ে জাকজমকপূর্ণ ভাবে উদযাপন করেন গোটা বিশ্বের বাঙালিরা।
অতিমারীর মধ্যেই গত বছর বাড়িতে এসেছিলেন মা উমা। দশমীতে বিষন্ন মনেই সকলে বিদায় জানিয়েছিলেন ঘরের মেয়েকে। তবে গতবছরের বিষণ্ণতার মূল কারণ হলো। অতিমারীর জন্য বহু বাঁধায়, মহা সমারোহে দুর্গাপুজো উদযাপন করতে না পারা। অষ্টমী হোক কিংবা মায়ের নিরঞ্জনের সময়ে, সকলের প্রার্থনা ছিল মাগো বছর যেনো আমাদের ভালো কাটে।
সে আশায় বাধ সেধেছে মানবজীবনের এই মুহূর্তের সবচেয়ে বড় ভিলেন করোনাসুর। ওষুধ, ভ্যাকসিন, হাসপাতালের শয্যা এমনকি অক্সিজেনের ঘাটতি সর্বত্র। চারিদিক থেকে শুধু অসুস্থতা ও মৃত্যু খবর মিলছে। নেগেটিভ পরিস্থতি সামলে ক্লান্ত সকল!
হিন্দু শাস্ত্র অনুযায়ী মনে করা হয়, দেবীর দুর্গার মর্তে আগমন ও গমন যেই বাহনে, তার ওপর নির্ভর করে যে, গোটা বছরটা পৃথিবীবাসীর কেমন কাটবে? এই বছর মা দুর্গার আগমন বা গমন কী তাহলে জরামুক্ত করবে পৃথিবী? এই বছর দেবী দুর্গার আগমন ঘোটকে, যার অর্থ ছত্রভঙ্গ।
শাস্ত্রমতে বলা হয় সপ্তমীতে দেবী দুর্গার আগমন এবং দশমিতে গমন হয়। সাধারণত প্রতি বছর সপ্তমী ও দশমী কী বার পড়ছে তার ওপর নির্ভর করে দেবীর কিসে আগমন এবং এবং গমন সেটা বোঝা যায়। গত বছর দেবী দুর্গার আগমন হয়েছিল দোলায়। যার অর্থ মড়ক কিংবা মহামারী। যার ফলস্বরূপ ইতিমধ্যেই গোটা বিশ্ব দেখতে পাচ্ছে। করোনা ভাইরাসের চোখরাঙানির ফল কার্যত গত বছরের মার্চ মাস থেকে দেখতে পাচ্ছে বিশ্ববাসী।
বিভিন্ন সংগঠন তাদের মতো করে দেবী দুর্গাকে বরণ করার প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করেছে। যদিও পূজা শান্তির বারতা নিয়ে আসে তবুও আমাদের সমাজের মানুষের পশু সুলভ আচরণের লাঘব হয় না। তারা সংঘটনের পদ পদবী নিয়ে একটা না একটা সমস্যা সৃষ্টি করেই থাকে। যদিও দুর্গাপূজা শুধু ধর্মীয় দিক নয়, এটি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক মেলবন্ধনের এক অনন্য উৎসব। জগজ্জননী মা দুর্গা পৃথিবীর সবার দুঃখ, দুর্দশা ও হতাশা লাঘব করে বিশ্বের বুকে শান্তি প্রতিষ্ঠা করেন।
জগজ্জননী দেবী দুর্গার আগমনে আমাদের সবার দুঃখ, কষ্ট, হিংসা, দ্বেষ দূর হোক। পরাজিত হোক সব অশুভ শক্তির। সবার দেহ ও মনে ছড়িয়ে পড়ুক পবিত্রতা। সত্য-সুন্দরের আলোয় আলোকিত হোক পৃথিবী। এই হোক আমাদের সবার কামনা।