মনোনয়ন পত্র জমা : ৫নেতার দৃষ্টি এবার কেন্দ্রের দিকে
নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১০:০১ অপরাহ্ণসিলেট জেলা পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে মনোনয়ন যুদ্ধে মাঠে নামলেন আওয়ামী লীগের ৫ নেতা। বৃহস্পতিবার দলীয় মনোনয়ন সংগ্রহ ও জমাদান শেষে এই ৫ নেতার নাম নিশ্চিত হওয়া গেছে। তবে নেতাকর্মীদের ধারণা থাকলেও মনোনয়ন সংগ্রহ কিংবা জমাদান করেন নি জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আলহাজ্ব শফিকুর রহমান চৌধুরী। তাঁর ঘনিষ্টজনরা বলছেন, তিনি সিলেট-২ আসন থেকে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে বেশি আগ্রহী।
তবে জেলা আওয়ামী লীগের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, জেলা সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন খানকে সমর্থন দিয়ে তিনি জেলা পরিষদ নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন ফরম ক্রয় করেন নি দলের অপর হেভিওয়েট নেতা ও সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ।
সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক জগলু চৌধুরীর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী বৃহস্পতিবার (৮ সেপ্টেম্বর) শেষ দিন পর্যন্ত যারা আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ ও জমাদান করেছেন, তারা হলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও সিলেট জজকোর্টের পিপি অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন খান, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সাদ উদ্দিন আহমদ, সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি বিজিত চৌধুরী ও বর্তমান প্রশাসক কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়াম লীগের সহসভাপতি জয়নাল আবেদীন।
সিলেট জেলা পরিষদের প্রথম প্রশাসক মনোনীত হন জেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সভাপতি আব্দুজ জহির চৌধুরী সুফিয়ান। তিনি ২০১১ সালে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব লাভ করেন। ২০১৫ সালের ৯ সেপ্টেম্বর তিনি মৃত্যুবরণ করলে ২০১৬ সালের ১৯ জুলাই সিলেট জেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত প্রশাসকের দায়িত্ব লাভ করেন জেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাডভোকেট লুৎফুর রহমান। পরবর্তীতে শুন্য পদে ২০১৬ সালের ২৮ ডিসেম্বর জেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে অ্যাডভোকেট লুৎফুর রহমান সিলেট জেলা পরিষদের প্রথম নির্বাচিত চেয়ারম্যান হওয়ার গৌরব অর্জন করেন। পরবর্তীতে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব লাভ করেন প্যানেল চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদিন।
চলতি বছরের ১৭ এপ্রিল মেয়াদোত্তীর্ণের পর জেলা পরিষদে প্রশাসক বসানোর সুযোগ সৃষ্টি করে সরকার। সব ধাপ শেষ করে সংশোধিত জেলা পরিষদ আইনের গেজেট গত ১৩ এপ্রিল প্রকাশ করা হয়। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ৬১টি জেলা পরিষদের মেয়াদ প্রথম সভার তারিখ থেকে পাঁচ বছর পূর্ণ হওয়ায় পরিষদগুলো বিলুপ্ত করা হয়েছে। পরিষদে প্রশাসক নিয়োগের আগে প্রত্যেক জেলা পরিষদের প্রশাসনিক ও আর্থিক ক্ষমতা পরিচালনার জন্য প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বা ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাদের দায়িত্ব অর্পণ করা হয়। ওইদিনই সিলেট জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সন্দিপ কুমার সিংহকে দায়িত্ব অর্পণ করা হয়। একইসঙ্গে ২৫ এপ্রিলের মধ্যে জেলা পরিষদের প্রশাসক নিয়োগের ঘোষণা দেওয়া হয়। এতে বলা হয় নির্বাচন পূর্ববর্তী সরকার মনোনীত প্রশাসক দায়িত্ব পালন করবেন জেলা পরিষদের। তবে সরকার এরই মধ্যে স্ব স্ব জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানদের নির্বাচন পূববর্তী প্রশাসক নিয়োগ চূড়ান্ত করে। ফলে সিলেট জেলা পরিষদে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদিন প্রশাসকের দায়িত্ব লাভ করেন।
সিলেট জেলা পরিষদের ওয়ার্ডসীমা পূন নির্ধারণের চূড়ান্ত বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী জেলা পরিষদের মোট ভোটার ১৫২৬ জন। সিলেটে ১৩ টি উপজেলায় মোট ভোটার ৩৯ জন। প্রতি ইউনিয়ন পরিষদে ১৩ জন করে ১০৫ ইউনিয়ন পরিষদে মোট ভোটার সংখ্যা ১৩৬৫ জন। পৌরসভায় ১৩ জন করে ৫ পৌরসভায় ভোটার ৬৫ জন। সিলেট সিটি করপোরেশেনে ভোটার রয়েছেন ৫৭ জন।
তফসিল অনুযায়ী, ১৭ অক্টোবর জেলা পরিষদে এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এর আগে ২০১৬ সালের ২৯ ডিসেম্বর প্রথমবারের মতো জেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে ঘোষিত নিবাচনী তফসীল অনুযায়ী মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ১৫ সেপ্টেম্বর, মনোনয়নপত্র বাছাই ১৮ সেপ্টেম্বর, মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের বিরুদ্ধে আপিল দায়েরের সময় ১৯ থেকে ২১ সেপ্টেম্বর, আপিল নিষ্পত্তি ২২ থেকে ২৪ সেপ্টেম্বর, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২৫ সেপ্টেম্বর। প্রতীক বরাদ্দ ২৬ সেপ্টেম্বর। আর ভোটগ্রহণ ১৭ অক্টোবর। ষষ্ঠতম কমিশন সভা শেষে মঙ্গলবার (২৩ আগস্ট) নির্বাচন কমিশনের (ইসি) অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ নির্বাচনের এ তফসিল ঘোষণা দেন।