জিআই স্বীকৃতি পেল চাঁপাইনবাবগঞ্জের ল্যাংড়া ও আশ্বিনা আম
নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ০৫ জুলাই ২০২৩, ১১:৫৬ অপরাহ্ণঅবশেষে চাঁপাইনবাবগঞ্জের ল্যাংড়া ও আশ্বিনা আমও পেল ভৌগলিক নির্দেশক-জিআই স্বীকৃতি। আবেদনের দীর্ঘ ছয় বছর পর চাঁপাইনবাবগঞ্জে জনপ্রিয় এই আমের জাত দুটি স্বীকৃতি পেয়েছে। শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন প্রতিষ্ঠান প্যাটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেড মার্কস অধিদপ্তরের (ডিপিডিটি) সভায় ল্যাংড়া ও আশ্বিনা আমকে জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালের ২ ফেব্রুয়ারি খিরশাপাতি, ল্যাংড়া ও আশ্বিনা আমকে জিআই পণ্য স্বীকৃতি দিতে আবেদন করে চাঁপাইবাবগঞ্জ আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্র। ২০১৯ সালে জিআই স্বীকৃতি পায় খিরশাপাতি আম। এর প্রায় ছয় বছর সাত মাস পর ল্যাংড়া ও আশ্বিনা আম জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেল।
ল্যাংড়া ও আশ্বিনা আম জিআই পণ্য স্বীকৃতি পাওয়ায় উচ্ছ্বসিত আম চাষি ও বাগান মালিকেরা। তারা জানান, ল্যাংড়া ও আশ্বিনা আমকে জিআই মনোনয়ন দেওয়ায় জাত দুটি বিশ্ব পরিমণ্ডলে আরো পরিচিত হয়ে উঠবে। এ আমগুলো বিদেশে রপ্তানি করে অর্থনীতিতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখা সম্ভব হবে।
কৃষি গবেষণার তথ্য মতে, ল্যাংড়া আমের বোঁটা চিকন, আঁটি পাতলা। এ আমের মিষ্টতার পরিমাণ গড়ে ১৯ দশমিক ৭ শতাংশ। আমের ভক্ষণযোগ্য অংশ ৭৩ দশমিক ১ শতাংশ। অন্যদিকে আশ্বিনা আমের গাছে মুকুল আসার প্রায় ৩ থেকে ৪ মাস পর পাকে। আমটির বোঁটা শক্ত আর নিচের অংশ চোঁচালো। মিষ্টতার পরিমাণ প্রায় গড়ে ২০ শতাংশ। আশ্বিনা আমের ভক্ষণযোগ্য অংশ প্রায় ৭৭ শতাংশ।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মুনজের আলম মানিক বলেন, ‘ল্যাংড়া আর আশ্বিনা আম জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। এটি খুবই আনন্দের খবর। আম দুটি জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ায় বিশ্ববাজারে এ আম রপ্তানি আরো সহজ হবে।’
চাঁপাইনবাবগঞ্জের আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. মোখলেসুর রহমান জানান, ২০১৭ সালে চাঁপাইনবাবগঞ্জের ল্যাংড়া ও আশ্বিনা আমের জিআই স্বীকৃতির জন্য আবেদন করা হয়েছিল। ওই আবেদনের প্রেক্ষিতে দীর্ঘ যাচাই-বাছাই শেষে জিআই স্বীকৃতি পাওয়া গেছে। খুব শিগগির ল্যাংড়া ও আশ্বিনা আমের জিআই স্বীকৃতি সনদ হাতে পাওয়া যাবে। ওই দুটি আমের সনদ পাওয়া গেলে চাঁপাইনবাবগঞ্জের ৪টি আমের জিআই স্বীকৃতি মিলবে।
আন্তর্জাতিক মেধাস্বত্ববিষয়ক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল প্রপার্টি রাইটস অর্গানাইজেশনের (ডব্লিউআইপিও) নিয়ম মেনে শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীন ডিপিডিটি জিআই পণ্যের স্বীকৃতি ও সনদ দিয়ে থাকে। ২০১৩ সালে ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য (নিবন্ধন ও সুরক্ষা) আইন হয়। ২০১৫ সালে আইনের বিধিমালা তৈরির পর জিআই পণ্যের নিবন্ধন নিতে আহ্বান জানায় ডিপিডিটি।
কোনো পণ্যের জিআই স্বীকৃতির অন্তত দুটি তাৎপর্য আছে। ডিপিডিটির ডেপুটি রেজিস্ট্রার মো. জিল্লুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, প্রথম গুরুত্ব হলো এর মাধ্যমে কোনো পণ্য কোনো নির্দিষ্ট এলাকার বলে চিহ্নিত হয়। এর বৈশ্বিক স্বীকৃতি মেলে। দ্বিতীয় গুরুত্ব হলো, এর মাধ্যমে পণ্যটির বাণিজ্যিকীকরণের সুবিধা হয়। পণ্যটি যখন বাইরের দেশে পাঠানো হয়, তখন জিআই স্বীকৃতি পণ্যের মান ও দাম নির্ধারণে বড় ভূমিকা রাখে।