মির্জা ফখরুল কারাগারে : গ্রেপ্তার ৫ শতাধিক

বাংলানিউজ এনওয়াই ডেস্ক :
প্রকাশিত হয়েছে : ৩০ অক্টোবর ২০২৩, ১১:৫৮ পূর্বাহ্ণ
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় রমনা থানায় করা মামলায় ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এর আগে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে রাজধানীর গুলশানের বাসা থেকে আটকের সাড়ে ৯ ঘণ্টা পর গ্রেপ্তার দেখানোর কথা জানিয়েছে পুলিশ। রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত মির্জা ফখরুলকে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) কার্যালয়ে রাখা হয়েছে। এর আগে, বিএনপির চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান বলেন, রোববার সকালে রাজধানীর গুলশান-২-এর বাসা থেকে মির্জা ফখরুলকে আটক করে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)।
মির্জা ফখরুলের বিষয়ে পুলিশের সিদ্ধান্ত জানতে সন্ধ্যা ৭টার দিকে যোগাযোগ করা হলে ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান বলেন, হত্যা ও গাড়ি পোড়ানোর ঘটনায় পল্টন থানায় যে মামলা হয়েছে, সেই মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
এদিকে, শনিবার দিবাগত রাত থেকে রোববার পর্যন্ত বিএনপির চার শীর্ষ নেতার বাসায় তল্লাশি চালিয়েছে পুলিশ। অন্য দিকে, বিএনপির ডাকা শান্তিপূর্ণ মহাবেশ ঘিরে সংঘর্ষের ঘটনায় ঢাকার বিভিন্ন থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। পুলিশ হত্যা, সরকারি কাজে বাধাদান, পুলিশকে মারধর, যানবাহন ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগে মামলাগুলো দায়ের করেছে পুলিশ। সব মিলিয়ে ঢাকার বিভিন্ন থানায় মোট ২৪টি মামলা দায়ের করেছে পুলিশ।
ঢাকা মহানগর পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, রোববার সকাল ৯টার দিকে ঢাকার গুলশানের বাসভবন থেকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে ‘আটক’ করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। পরে তাকে ডিবি পুলিশ কার্যালয়ে নেওয়া হয়। পুলিশ হত্যা, পুলিশকে আহত করা, যানবাহন ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে দায়েরকৃত বেশ কয়েকটি মামলায় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে গ্রেপ্তার দেখানো হতে পারে।
এদিকে, শনিবার দিবাগত রাত থেকে রোববার পর্যন্ত বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, শাহজাহানপুরে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি পোড়ানোর মামলার প্রধান আসামি বিএনপির সাবেক মন্ত্রী মির্জা আব্বাস ও ইশরাক হোসেনের বাসায় অভিযান চালিয়েছে।
এদিকে, এদিন সকাল ৯টার দিকে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর বনানীর বাসায় দু’টি ফ্ল্যাটে পুলিশ তল্লাশি চালায়। তবে সে সময় তিনি বাসায় ছিলেন না।
এদিকে, মির্জা আব্বাসের শাজাহানপুরের বাসায় রোববার দুপুরে ডিবির সদস্যরা গিয়ে তাকে বাসায় না পেয়ে ফিরে যায় বলে জানান বিএনপির প্রেস উইংয়ের কর্মকর্তা শামসুদ্দিন দিদার।
অন্যদিকে, বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এদিন সকালে সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালের লালমাটিয়ার বাসায় সাদা পোশাকের পুলিশ তল্লাশি চালিয়েছে। তবে তিনি বাসায় ছিলেন না।
বিএনপির নেতাদের বাসায় তল্লাশি ও অভিযানের বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের উপকমিশনার মো. ফারুক হোসেন বলেন, এ বিষয়ে তার কিছু জানা নেই। ডিবি পুলিশ এটা বলতে পারবে। অবশ্য বিষয়টি নিয়ে ডিবির কারও বক্তব্য পাওয়া যায়নি। এর আগে, শনিবার রাজধানীর নয়া পল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশ ছিল। মহাসমাবেশ শুরুর আগেই কাকরাইলে দুপুর থেকে বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। এই সংঘর্ষ পরে বিজয়নগর পানির ট্যাংক ও শান্তিনগর এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে বিকাল ৩টার দিকে বিএনপির মহাসমাবেশ পণ্ড হয়ে যায়।
বিএনপির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে পুলিশের এক সদস্য ও যুবদলের ওয়ার্ড পর্যায়ের এক নেতা নিহত হন। সংঘর্ষে আহত হয়েছেন পুলিশের ৪১ ও আনসারের ২৫ সদস্য। আহত হয়েছেন কমপক্ষে ২০ জন সাংবাদিক। সংঘর্ষে হাজারের বেশি নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলে দাবি বিএনপির।
সারা দেশে ৫ শতাধিক নেতাকর্মী আটক
এদিকে, বিএনপির ডাকা রোববার সকাল-সন্ধ্যা হরতালে নাশকতা পরিকল্পনার অভিযোগে দেশের বিভিন্ন জেলা উপজেলা থেকে পাঁচ শতাধিক বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ।