আর্জেন্টিনার জয়, ব্রাজিলের টানা ৩ হার
স্পোর্টস ডেস্ক :
প্রকাশিত হয়েছে : ২২ নভেম্বর ২০২৩, ২:২০ অপরাহ্ণউত্তাপের ম্যাচে ব্রাজিলের বিপক্ষে ১-০ গোলে জিতেছে আর্জেন্টিনা। বুধবার (২২ নভেম্বর) বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের জয়ে একমাত্র গোলটি করেন নিকোলাস ওতামেন্দি। এ নিয়ে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে টানা তিন ম্যাচ হেরেছে ব্রাজিল। গত মাসে উরুগুয়ে আর এই মাসে কলম্বিয়ার কাছে হারের পর এবার সুপার ক্লাসিকোতে আর্জেন্টিনার কাছে হেরেছে পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা।
২০২৬ বিশ্বকাপের লাতিন আমেরিকা অঞ্চলের বাছাইয়ে টানা চার জয়ের পর সবশেষ ম্যাচে উরুগুয়ের বিপক্ষে হেরেছিল আর্জেন্টিনা। ব্রাজিলকে হারিয়ে জয়ে ফেরা লিওনেল স্কালোনির দল ছয় ম্যাচে ১৫ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষ স্থান মজবুত করল আরো। ব্রাজিলের দুঃসময় বাড়ল আরো। টানা তৃতীয় হারের তেতো স্বাদ পাওয়া ফের্নান্দো জিনিসের দল নেমে গেল ষষ্ঠ স্থানে।
এর আগে ম্যাচ শুরুর কয়েক মিনিট আগে গ্যালারিতে উত্তাপের সূচনা। আর্জেন্টিনার সংবাদমাধ্যম টিওয়াইসি স্পোর্টস জানিয়েছে, জাতীয় সংগীত গাওয়ার সময় আর্জেন্টিনা সমর্থকেরা দুয়ো দিলে তাদের ওপর আসন ছুঁড়ে মারতে শুরু করে ব্রাজিলের সমর্থকেরা। একপর্যায়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে লাঠিপেটা শুরু করে পুলিশ। লিওনেল মেসিসহ আর্জেন্টিনা দল এবং মারকিনিওস গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন। যদিও তাতে কোনো লাভ হয়নি। একপর্যায়ে সতীর্থদের নিয়ে মাঠ থেকে বেরিয়ে যান মেসি। এরপর পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হলে ম্যাচ শুরু হয় নির্ধারিত সময়ের প্রায় আধা ঘণ্টা পর।
ম্যাচের দুই মিনিটের মাথায় একক প্রচেষ্টায় চমকে দেয়ার চেষ্টা করেছিলেন রাফিনিয়া। তবে রেফারি অফসাইডের পতাকা তোলায় থামতে হয়। ম্যাচের ৬ মিনিটে ‘রিবাউন্ড’ থেকে বল পান জেসুস। চেষ্টা করেন রদ্রিগো দি পলকে ড্রিবল করে এগিয়ে যেতে কিন্তু তাঁর হাত গিয়ে লাগে দি পলের মুখে। ফলাফল ম্যাচের প্রথম হলুদ কার্ড দেখেন জেসুস। এই ঘটনায় দুই দলের মধ্যে ফের ছড়িয়ে পড়ে উত্তাপ। এর মধ্যেও অবশ্য ব্রাজিল চেষ্টা করে আক্রমণে গিয়ে সুযোগ তৈরি করতে। তবে ১৩ মিনিটে দি পলকে ফাউল করে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখেন রাফিনিয়া। প্রথম ১৮ মিনিটে এদিন ব্রাজিল ফাউল করে ৮টি।
সংঘাতপূর্ণ এই ম্যাচের প্রথম ২৫ মিনিটে অন্তত ১০ জন খেলোয়াড়কে মাঠে গড়িয়ে পড়তে দেখা গেছে। ম্যাচের ২৬ মিনিটে গিয়ে প্রথমবারের বল পায়ে আক্রমণে দেখা যায় মেসিকে। যদিও সেই আক্রমণে গোলের কোনো সম্ভাবনা তৈরি করতে পারেননি ইন্টার মায়ামি তারকা। ৩৩ মিনিটে অ্যালিসন বেকারের ট্রেডমার্ক পাস থেকে বল পেয়ে এগিয়ে যান গ্যাব্রিয়েল মার্তিনেল্লি। দারুণভাবে নাহুয়েল মলিনা এবং দি পলকে ড্রিবল করলেও বক্সের কাছাকাছি গিয়ে নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারেননি।
৩৭ মিনিটে বক্সের কাছাকাছি জায়গায় ফ্রি কিক পায় ব্রাজিল। রাফিনিয়ার শট কর্নারের বিনিময়ে ঠেকান এমিলিয়ানো মার্তিনেজ। প্রথমার্ধের শেষ দিকে গিয়ে আর্জেন্টিনা বক্সের কাছাকাছি জায়গায় বেশ হুমকি তৈরি করেন রদ্রিগো-জেসুসরা। ৪৪ মিনিটে মার্তিনেল্লির শট মার্তিনেজকে পেরিয়ে গেলেও গোললাইনের কাছাকাছি জায়গা থেকে ক্লিয়ার করেন এক আর্জেন্টাইন ডিফেন্ডার। প্রথমার্ধে সব মিলিয়ে ২২টি ফাউল করেছে দুই দল। যেখানে ব্রাজিলের ১৬টি ফাউলের বিপরীতে আর্জেন্টিনার ফাউল ছিল ৬টি।
দ্বিতীয়ার্ধেও আর্জেন্টিনার অর্ধে নিজেদের অবস্থান ধরে রাখে ব্রাজিল। একাধিকবার আক্রমণে গিয়ে সুযোগ তৈরিরও চেষ্টা করেছে তারা। যদিও রক্ষণদেয়াল ভাঙতে পারেনি তারা। ম্যাচের ৫৮ মিনিটে মার্তিনেল্লির প্রচেষ্টা মার্তিনেজ দারুণভাবে ঠেকিয়ে না দিলে ম্যাচের প্রথম গোলটি পেয়েই গিয়েছিল ব্রাজিল। তবে খেলার ধারার বিপরীতে ম্যাচের ৬৩ মিনিটে এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা। লো সেলসোর কর্নার থেকে হেডে লক্ষ্যভেদ করেন নিকোলাস ওতামেন্দি। এরপর ম্যাচের ৭৮ মিনিটে নিষ্প্রভ মেসিকে তুলে নিয়ে আনহেল দি মারিয়াকে নামায় আর্জেন্টিনা। ৮১ মিনিটে ব্রাজিলের বিপদ আরও বাড়ে জেয়েলিংটন লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়লে। ১০ জনের ব্রাজিল শেষ পর্যন্ত চেষ্টা করেও আর ম্যাচে ফিরতে পারেনি। বাছাই পর্বে টানা তৃতীয় হার নিয়ে মাঠ ছাড়ল ব্রাজিল।