মৌলভীবাজার-১ : জাকিরের প্রতি ঝোঁক বেশি ভোটারদের
মৌলভীবাজার প্রতিনিধি:
প্রকাশিত হয়েছে : ২২ নভেম্বর ২০২৩, ৮:৩৪ অপরাহ্ণমৌলভীবাজারে তরুণ ভোটারদের দৃষ্টি এখন সাবেক ছাত্রনেতা জাকির হোসাইনকে ঘিরে। বেশ কয়েকবছর যাবত তিনি জুড়ী ও বড়লেখায় কাজ করছেন সাধারণ মানুষের কল্যাণে। বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত স্মার্ট জনপদ গঠনের আহবান তিনি পৌছে দিচ্ছেন তৃণমূলে। তখন থেকেই ভোটারদের ধারণা, মৌলভীবাজার-১ আসনে স্মার্ট জনপদের কান্ডারী হতে প্রার্থী হচ্ছেন তিনি। দলের মনোনয়র ফরম ক্রয় ও জমাদানের পর এই আসনে জাকির হোসাইনকে নিয়ে ঝড় বইছে আলোচনার।
জুড়ী ও বড়লেখা নিয়ে মৌলভীবাজার-১ আসন। এই আসনে বর্তমান ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ১৫ হাজার ৮৪৫ জন। এই আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য বন ও পরিবেশ মন্ত্রী মোঃ শাহাব উদ্দিন। তিনি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও আওয়ামী লীগের একক প্রার্থী ছিলেন। তবে এবারই এই আসনে প্রথমবারের মতো মনোনয়ন জমা দিলেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসাইন। আওয়ামী লীগের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত এ আসনে ৭ বার আওয়ামী লীগের নৌকা, ১ বার বিএনপি’র ধানের শীষ ও একবার জাতীয় পার্টির লাঙ্গল মার্কার বিজয় হয়েছে।
মো. শাহাব উদ্দিন ১৯৯৬ সালে প্রথম বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পেয়ে বিএনপির হেভিওয়েট প্রার্থী সাবেক প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট এবাদুর রহমান চৌধুরীকে পরাজিত করে এমপি নির্বাচিত হন। ২০০১ সালের সংসদ নির্বাচনে তিনি অল্প ভোটের ব্যবধানে হেরে গেলেও ২০০৮ এ আবারো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। সে ধারাবাহিকতায় ২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদে এবং ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত হয়ে পরপর তিনবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান। এছাড়াও ২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদে সরকার দলীয় হুইপের দায়িত্ব পালন করেন।
এবার এ আসনে নৌকার মনোনয়ন চাচ্ছেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসাইন। করোনাকালে ও ভয়াবহ বন্যার সময় তিনি বড়লেখা ও জুড়ীর মানুষের জন্য কাজ করেছেন। বিশেষ করে এ আসনে তরুণ প্রজন্মের ভোটারদের কাছে তিনি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন। ইতোমধ্যে দ্বাদশ নির্বাচনে নৌকার মনোনয়ন পেতে তিনি দলীয় মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছেন। এ আসনে এসএম জাকির হোসাইন ছাড়াও দলীয় মনোনয়ন জমা দিয়েছেন কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাবেক সদস্য এডভোকেট সিরাজুল ইসলাম, বড়লেখা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম সুন্দর ও জুড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম।
জানা যায়, ২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নৌকার প্রার্থী মোঃ শাহাব উদ্দিনকে পরাজিত করে প্রথমবারের মতো বিএনপি এ আসনে জয়লাভ করে। এ নির্বাচনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের প্রার্থী এডভোকেট এবাদুর রহমান চৌধুরী ৪৯ হাজার ২ শ ৮১ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। আর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নৌকার প্রার্থী মোঃ শাহাব উদ্দিন ভোট পান ৪৭ হাজার ৫শ ৩৯ ভোট। নির্বাচিত হয়ে এডভোকেট এবাদুর রহমান বিএনপি সরকারের ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।
বিগত ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি’র ধানের শীষের প্রার্থী জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি নাসির উদ্দিন আহমেদ মিঠু আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোঃ শাহাব উদ্দিনের কাছে পরাজিত হন। এ নির্বাচনে তিনি ৬৫ হাজার ৮ শ ১৪ ভোট পেয়ে পরাজিত হন।
এক সময়ে জাতীয় পার্টি এ আসনে সুবিধাজনক অবস্থানে থাকলেও ২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী আহমেদ রিয়াজ উদ্দিন আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোঃ শাহাব উদ্দিনের কাছে পরাজিত হন। এবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে মাঠে চষে বেড়াচ্ছেন এবং দলীয় মনোনয়ন পেতে লবিং করে যাচ্ছেন।
এদিকে জামায়াতে ইসলামী থেকে একক পার্টি হিসেবে মাঠে রয়েছেন কেন্দ্রীয় জামায়াত নেতা মোঃ আমিনুল ইসলাম।
দলীয় মনোনয়ন প্রাপ্তির বিষয়ে জানতে চাইলে এসএম জাকির হোসাইন জানান,নি:সন্দেহে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়ন কর্মযজ্ঞের প্রভাব রয়েছে এই আসনে। তবে তাতে পরিকল্পনার বেশ অভাব ছিল। পরিকল্পনা যথাযথ হলে কয়েকবছরে এই আসনের চেহারাই পাল্টে যেতো। তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী চান স্মার্ট বাংলাদেশ। যার মূল শক্তি হবে আধুনিক চিন্তা,চেতনা নির্ভর উন্নয়নকামী মানুষ। যাদের হাত ধরেই বাংলার প্রতিটি জনপদ হবে স্মার্ট। তিনি বলেন, আমার রক্তে মুজিবাদর্শ। একজন শেখ হাসিনা সারাদেশের উন্নয়নের বাতিঘরে। সেই ঘরের আলো জ্বালিয়ে জুড়ী-বড়লেখাকে স্মার্ট জনপদে রূপান্তর করতে চাই।