কবি নাসিমা জোহা চৌধুরী’র একগুচ্ছ কবিতা
নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১:১১ পূর্বাহ্ণকবি-নাসিমা জোহা চৌধুরী
ঝরাপাতার বিষাদগাঁথা
ঝরাপাতা হয়ে পদ দলিত হই, নীচের দিকে এখন কেউনা ফিরে তাকায়,আপন হয়ে ঝুঁকে কাঁধটা কি কেউ ঝাঁকায়? সেই আশাতে আহা শুধু যে চেয়ে রই!
যতই আমি আশায় পথ চেয়ে থাকি, চতুর সময় ঠিকই দিচ্ছে আমায় ফাঁকি,ঝরাপাতার বুকে মর্মরে সুর তুলে, যাচ্ছে পথিক ঘরে,যাচ্ছে হেলেদুলে।
যাচ্ছে তারা পাল উড়ায়ে মনের সুখে, যাচ্ছে সবাই সবার সেই আপন ঠিকানায়,সুধায় তারা হেসে তোমার বাড়ি কই গো?ঝরাপাতা বলি হেসে — আছে ঐ গো
ঐযে দেখো শূণ্যডাল শুকনো মর্মরে, সেখানে তো বাড়ি ছিলো, ঘর ছিলো রে! আজকে আমি নিঃস্ব রিক্ত পরিত্যক্ত, হেলা ফেলার বটে! ঝরাপাতা বটে!
কেউ কি কভু উল্টে দেখছো জীবন পাতা? দেখছো কি কেউ সেই পেছনের খেরোখাতা?
আমিও ছিলাম কচি পল্লব সবুজ কিশলয়, আমিও ছিলাম মঞ্জুরী রঙিন পুষ্পময়। ঝরাপাতা নয়তো মোটে আমার নামটি , নয়তো পরিচয়! তবু সবাই কটাক্ষে ঝরাপাতা কয়, পরাণে এসব কি সয়!
মার্বেলফুল
তোমার উনুনের আগুন উস্কে দিয়েছে বুঝনি?
তুমি বেহুঁশ! আগুন নেভাতে দিগ্বিদিগ ছুটেছো,
ওদিকে হাততালি দিয়ে মজা লুটতেছে একজন।
একটু সজাগ থাকলে কি হয়?
আঁচলটা বিছানো থাকুক
কারও ইচ্ছে হলে শুইবে,
না শুইলে নাই আপত্তি নেই
গুটিয়ে নেবার কি দরকার?
হাতের তালু সবসময় উম্মুক্ত থাকুক
জোছনা আর শিশিরের ছোঁয়ায় ফুটবে একদিন মার্বেল ফুল!
কেন তবে অকারণে হকচকানি অকারণে হুলস্থুল?
অব্যর্থ জনম
যেখানে সেখানে হাত পা ছড়িয়ে ঘুমিয়ে পড়ি
এমন অসহায়ত্ব দেখে সূর্যটাও হেসে ওঠে
রৌদ্রের কাঁথা টেনে শুয়ে চুপচাপ থাকি,
না, মন্দ নয় এই নিরীহ শামুক জীবন।
নিতান্ত তুচ্ছ নয় মোটে ;
ছোট্ট, কিন্তু হীরের নাকফুলের মতোই শ্রীময় —
দ্যোতিময় এবং মূল্যবান।
ধন্যবাদ উর্ধ্বের কর্তাকে,
কেউকেউ দুপায়ে মাড়িয়ে যাচ্ছে,
যাক ; খোলস ভেঙে মাংস থেতলে যাচ্ছে —
চিংড়ির মগজের মত গলেগলে পড়েছে
তবুও আপত্তি নেই। সত্যিটা আজ জেনে গেছি,
কোন জন্মই বৃথা নয়।
এবিএ/ ০৩ ফেব্রুয়ারী