কবি ছন্দা দাশ এর একগুচ্ছ কবিতা
নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১:০২ অপরাহ্ণ- কবি ছন্দা দাশ
পকেটমার
ঐ মেয়েটা কী যেন নাম বড্ড রকম বাজে
ওর সাথে কী ঝগড়া করা আমার বলো সাজে?
কারণ ছাড়াই হঠাৎ এসে ভেংচি কেটে বলে
এই ছেলেটা হাবার মতো যাস কেন তুই চলে?
দেখনা সাজে কেমন আমি পুতুল পুতুল মুখ
চোখ বুঝি তোর অন্য কিছুর জন্যেতে উন্মুখ?
এই ছেলেটা আমার মতো কন্যে পাবি কই
আমি তো আর সবার মতো তুচ্ছ কিছু নই।
তোর মতো ঠিক হাজার ছেলে আমার পিছে পিছে
তোর কথা কি বলবো আমি তুই তো তাদের নীচে।
জানিস যদি কে আমি রে, চমকে যাবে পিলে
তখন জানি মারবে মোচড় তোর সে কঠিন দিলে।
এই ছেলে তুই যাসনা এমন হনহনিয়ে চলে
তুই ছেলেটা বডড বোকা দিলাম তোকে বলে।
আমি কি আর বুঝবো না তার ছলা কলার ঢং
পকেট কেটে করবে সাফাই জানি তো সব রং।
স্বাধীনতা
মানুষ স্বাধীনতা স্বাধীনতা বলে কেন
গলা ফাটায় এই কথাটাই ভেবে ভেবে
আমার অনেক বসন্ত কেটে গেছে।
অথচ খুব কাছে থেকে আমি দেখেছি
মানুষ স্বাধীনতার চাইতে পরাধীনতার
আশ্রয়ে বাস করতে ভালোবাসে।
আমার উপর তলায় যে দম্পতীর বাস
রাত দুপুরে স্বাধীনতা নিয়ে তাদের
কলহে আমি কানে তুলো দিয়েও
টেলিভিশনের ভ্যলুউম বাড়িয়ে দিই
ওদের চিৎকারের শব্দ ম্লান করার জন্যে
ওরা ওদের জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ সময়ের
অপচয় করে যায় এমনিভাবে।স্বাধীনতা
ওদূরে হামাগুড়ি দেয়।
বিকেলে পার্কে বসে থাকা মাঝবয়সী
লোকটা রোজ লেকের জলে মাছের
খেলা দেখতে দেখতে বিষণ্ন মনে
কি যেন ভেবে ভেবে গাঢ় হতে থাকে।
আমি একদিন খুব কাছে গিয়ে বসতেই
বলে উঠে একা থাকাই ভালো।
স্বাধীনতা নেই আমার জীবনে।
সন্ধ্যে হলেই সেই আবার সুবোধ বালকের
মত সময়মত ঘরে ফিরে যায় ঘরের টানে
স্বেচ্ছানির্বাসনে।
স্বাধীনতা তখন আমার কানে কানে বলে
মানুষ আসলে বন্দীখাঁচা থেকে মুক্তির
স্বাদ নিতে ভালোবাসে।
সূর্য পতন
সেই রাতে, চলেছিল এক মহাপ্রলয়।
নিদ্রাহীন আমি অজানা
শব্দের সাক্ষী হয়ে বার বার
কেঁপে উঠেছি, ভয়ে ।ঢেকেছি
মুখ চাদরের ভাঁজে।
রাত বয়ে গেছে নির্লজ্জ ইতিহাস
হয়ে। আমি ও যেন তার ধারক
খুনের পরিচয়ে।
রাত হয় ভোর। বাতাসে খুনের
গন্ধ।চোখ মেলে চেয়ে দেখি
সকালের সুর্যটা ঘাসের সবুজে
পড়ে আছে। পৃথিবী নীরব।
রক্তের ধারায় লাল স্রোত
পদ্মা, মেঘনা, যমুনার বুকে।
এবিএ/২০ ফেব্রুয়ারী