মাশূকনামা কবির জন্মদিন আজ
নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ২৩ মার্চ ২০২১, ৩:০৯ অপরাহ্ণশুভ জন্মদিন, প্রিয় মানুষ, প্রিয় কবি মাশূক ইবনে আনিস। তিনি আমায় দাদুভাই ডাকেন। আমি তাঁকে ডাকি। অনেক দিন ধরে ডাকি। এখন আমরা একে অপরকে দাদুভাই বলেই সম্বোধন করি। কি প্রেম কি এক অপূর্ব মায়া এক অনন্য অপরিসীম জোড়ালো বন্ধন এই ডাকে।।
যখন সিলেট আসি তারপর থেকে কবিতার মোহে পড়ে যাই। এর আগেও পড়তাম কিন্তু ততোটা না। তারপর থেকে কবিতার প্রেমে বিগড়ে গেলাম। কবিতার কামড়ে অস্থির যুবা আমি। মনে হয়, শুধু কবিতার জন্য এই জন্ম, কবিতার জন্য এই বেড়ে ওঠা। কবিতার জন্য এই মৃত্যু।
নৌকার মাঝি জাবির ভাই এর মাধ্যমে কবি মাসূক ইবনে আনিস দাদুর সাথে আমার পরিচয়। তখন থেকেই বেশ সখ্যতা গড়ে ওঠে। আমি হয়ে যাই তার কবিতা ও আধ্যাত্বিক গানের একনিষ্ঠ ভক্ত। যখনি দেখা হয় হ্যা করে হাতের দিকে চেয়ে থাকি। কারণ তাঁর হাতে সব সময় একটা না একটা বই থাকেই।
মাশূক ইবনে আনিস আমাকে উপদেশ দিতেন
কবিতা লেখার আগে কবিতা কি কবিতা কেনো লিকখো আগে জানো? আমি তাঁর কথার উপকার পেলাম। আসলেই কবিতা কি জানি না। আর কবিতা লিখতে শুরু করলাম। এ কবিতা কখনোই আত্মার খোড়াক হতে পারে না।
সার্টিফিকেটের বয়সের বাইরে তাঁর প্রকৃত জন্ম ২৩ মার্চে, সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী সৈয়দপুর গ্রামে তাঁর জন্ম। গ্রাম সৈয়দপুর থেকে যাত্রা শুরু হলেও মাশূক ইবনে আনিস বাংলাদেশে ও বহি:বিশ্বের সাহিত্য অঙ্গনে স্বনামেই অধিক পরিচিত একজন নিভৃতচারী সাহিত্যিক। মূলত : কবিতাপ্রেমই একজন মাশূক ইবনে আনিসকে সাহিত্যের বাউলিপনায় বেঁধে রাখছে বহুমাত্রিক সুরে। মাশূক ইবনে আনিসের প্রথম কাব্যগ্রন্থ যদি বিদ্রোহ করি প্রকাশিত হয় ১৯৯৪ এর বাংলা একাডেমি গ্রন্থমেলায়। এরপর একে একে আরও তিনটি কাব্যগ্রন্থ, যথাক্রমে — অবশিষ্ট শূন্য এক, অলৌকিক মাশূকনামা ও অর্কের অধিবাস। এ ছাড়াও প্রকাশিতব্য কাব্যগ্রন্থ আমার উপরে মাটি এবং গানের বই মাশূকে এলাহি প্রকাশের অপেক্ষায় আছে।
২/#মাশূকে_এলাহি_সত্যান্বেশি_গান
গান গাইলে হয়— আত্মশুদ্ধি
আত্মশান্তি সুরে পাই,
আমি-গান ভালোবেসে-ই গাই— গো
আমি-গান ভালোবেসে গাই !!
সহজ সরল বাউলা গানে
আনন্দ পাই মনোপ্রাণে—২
গুরুর বাক্য রয় সিতানে
অধিনের আর কিচ্ছু নাই !!
ছোট্ট বেলা আমার মায়ে
সন্ধ্যা হইলে আঁচল ছায়ে—২
মৃদু কন্ঠে গান শোনায়ে
ঘুম পাড়াইতেন সত্যি তাই !!
গান গাইতেন বাবা দাদা
ছিলো না— রে গা মা পা দা—২
অন্তরে সুর— ছিলো সাদা
কন্ঠে ছিলেন মুর্শিদ সাঁই !!
জগন্নাথপুর গানের ভূবন
গানের রাজা রাধা রমন—২
গানে সুরে জীবন যাপন
সর্ব্বোলোকে দেখতে পাই !!
তারও আগে সৈয়দ শাহনূর
গান করেছেন গ্রাম-সৈয়দপুর—২
মাশূক বলে— আছে মশহুর
কিতাব খোলে দেখরে ভাই !!
৩/#মাশূকে_এলাহি_নিবেদনের_গান
কেমনে পাইতাম তোমার মন
ও-বা ঠাকুরধন,
কেনমে পাইতাম তোমার মন !!
তনো মনো লাগাইয়া করিনু কীর্তন
তোমারে খুঁজিয়া অন্ধ—
হইলো দুই নয়ন !! ( বা ঠাকুরধন )
দিন কাঠাই আনে-বানে
উড়ো উড়ো মন,
রাইতে আমি চাইলে দেখি—
তোমার শ্রী-চরণ। !! ( বা ঠাকুরধন )
যে-তোমারে দেখিয়াছে
দেয় না সে দর্শন,
আমি—তাঁরে খুঁজে ভূবনভ্রমি—
মিটাই আকিঞ্চন !! ( বা ঠাকুরধন )
তোমার জন্য— হন্য হইলাম
সাক্ষী যে পবন,
আকাশ পাতাল আগুন জলে—
তোমার নাম জপন !! ( বা ঠাকুরধন )
মাশূক আনিস তোমার লাগি
পাগল সর্বক্ষণ,
পুজনে— ভজনে আমার—
এই জীবন যাপন !! ( বা ঠাকুরধন )
তাঁর কবিতায় আছে প্রেম, দাহ, প্রকৃতি, নারী, রাজনীতি, সাম্যবাদ। এ কথা বলার পর এখন বরং বলি, শুভ জন্মদিন কবি মাশূক ইবনে আনিস। বারবার ফিরে আসুক এই দিনটি। কবি মাশূক ইবনে আনিস, দাদুভাইকে আমরা ভালোবাসি। কারণ, তিনি তাঁর জীবন বাংলা কবিতার জন্য উৎসর্গ করছেন। একজন সুন্দর মানুষ সারাটা জীবন সুন্দরের সাধনা করেছেন। আমরা তাঁকে ভালোবাসি।
বাংলা নিউজ এনওয়াই-এবিএ/04